বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
মিরর বাংলা

সহজ জয়ের পথে বাংলাদেশ


মিরর রিপোর্ট
মিরর রিপোর্ট
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৫

সহজ জয়ের পথে বাংলাদেশ
সহজ জয়ের পথে বাংলাদেশ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেট টেস্টে বড় ধরণের অঘটন না হলে সহজ জয়ের পথে রয়েছে বাংলাদেশ। শুরুর প্রথম দিনের সকাল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের খেলায় তৃতীয় দিনে ৩১০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের দুই বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও হাসান মুরাদের স্পিন জাদুতে ৮৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছে তারা। সে সুবাদে বাংলাদেশ মাঠ ছেড়েছে ২১৫ রানে এগিয়ে থেকে। চতুর্থ দিন আইরিশদের আর পাঁচ উইকেট নিতে পারলেই সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যাবেন শান্তরা।

আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা অভিষিক্ত ওপেনার চ্যাড কারমাইকেল বৃহস্পতিবার ইনিংস বড় করতে পারেননি। সিলেটের শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে নাহিদ রানার দারুণ গতির এক ইনসুইংগারে  ব্যাট ছুঁইয়ে বোল্ড হয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর হ্যারি টেক্টরকে নিয়ে ৫৭ রানে জুটিতে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন পল স্টার্লিং। 

তবে ১৮-তম ওভারে দ্বিতীয় বলে তাইজুল ইসলাম তাকে টেনে বের করে আনলেন উইকেটের সামনে। টার্নে পরাস্ত হন স্টার্লিং, কিন্তু বল হাতে রাখতে পারেননি লিটন। স্টাম্পিং মিস করলেও তার গ্লাভস ছুঁয়ে বল যায় প্রথম স্লিপে থাকা শান্তর দিকে, স্ট্রাইকিং এন্ডে থ্রো করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মিলিমিটারের ব্যবধানে রান আউট হতে হয় ৪৩ রানের ইনিংস খেলা স্টার্লিংকে। এরপর হ্যারি টেক্টর ফিরেছেন তার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। অভিষিক্ত মুরাদের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে শর্ট কভারে সাদমানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টিস ক্যাম্ফার। লরকান টাকারও এলবিডব্লিউ হয়েছেন তার বলের লাইন মিস করে। 

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিনের নায়ক মূলত মাহমুদুল হাসান জয়,  আর তৃতীয় দিন দারুণ এক সেঞ্চুরিতে ৩১০ রানের লিড এনে দিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এই দুই সেঞ্চুরিয়ানের বড় দুটি ইনিংসের সাথে মুমিনুল হক, লিটন দাসের জোড়া ফিফটিতে ঘরের মাঠে সর্বোচ্চ ৫৮৭/৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। 

দুটো সেঞ্চুরি, আর দুটো ৮০ পেরোনো ইনিংসে পর অবশ্য একটা রেকর্ডও হয়েছে বাংলাদেশের। নিজেদের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রথম চার ব্যাটার খেললেন ৮০ বা  ততোধিক রানের ইনিংস। হয়েছে ফিফটির রেকর্ডও, এক ইনিংসে পঞ্চমবারের মতো বাংলাদেশের পাঁচ ব্যাটার পেরিয়ে গেছেন ফিফটি। 

৫২ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করা বাংলাদেশ, জয়ের উইকেট হারিয়েছে সকালের সেশনেই। আগের দিন ১৬৯ রানে অপরাজিত থাকা এই ওপেনার যোগ করেছেন কেবল ২ রান। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসকে তাই ১৭১ রানের বেশি টেনে নিতে পারেননি তিনি। ১৪ চার ও চারটি ছক্কার এই ইনিংস থেমেছে ব্যারি ম্যাকার্থির বলে লরকান টাকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে, একইসাথে ভাঙে ১৭৩ রানের জুটি। জয়ের সাথে ওপেনিংয়ে ১৬৮ রানের জুটি গড়া সাদমান ইসলামের পর সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন মুমিনুল হকও। ম্যাকার্থির বলে ব্যক্তিগত ৮২ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার, ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কা। 

টপ অর্ডারের এই দুই ব্যাটার ফিরলেও রীতিমতো ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করেছেন শান্ত। ১৪ চারে ১১২ বলে ছুঁয়েছেন ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি, অধিনায়ক হিসেবে চতুর্থ। যা দেশের হয়ে যুগ্ম সর্বোচ্চ। অবশ্য সেঞ্চুরির পর উইকেটে ছিলেন মাত্র ২ বল, অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের বলে হয়েছেন এলবিডব্লিউ। 

শান্তর সাথে ৯৮ রানের জুটি গড়ে, আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ১৯-তম ফিফটি ছোঁয়া লিটন দাস থেমেছেন ৬৬ বলে ৬০ রানের ইনিংসে। সিলেটের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে যেভাবে ব্যাট করেছেন, চারপাশে শট খেলেছেন, সেঞ্চুরিটাও হয়তো পেয়েই যেতেন। যদিও বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হাম্ফ্রিসকে লং অনে তুলে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। পেছনে ছুটে গিয়ে দারুণ এক ক্যাচে তাকে থামান হ্যারি টেক্টর।  ৯৯তম টেস্ট খেলতে নামা মুশফিক অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি, ২৩ রানে থেমেছেন হামফ্রিসের বলেই। এই বাঁহাতি স্পিনার ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় বার নিলেন পাঁচ উইকেট। 

আপনার মতামত লিখুন

মিরর বাংলা

বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫


সহজ জয়ের পথে বাংলাদেশ

প্রকাশের তারিখ : ১৪ নভেম্বর ২০২৫

featured Image

সিলেট টেস্টে বড় ধরণের অঘটন না হলে সহজ জয়ের পথে রয়েছে বাংলাদেশ। শুরুর প্রথম দিনের সকাল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের খেলায় তৃতীয় দিনে ৩১০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের দুই বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও হাসান মুরাদের স্পিন জাদুতে ৮৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছে তারা। সে সুবাদে বাংলাদেশ মাঠ ছেড়েছে ২১৫ রানে এগিয়ে থেকে। চতুর্থ দিন আইরিশদের আর পাঁচ উইকেট নিতে পারলেই সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যাবেন শান্তরা।

আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা অভিষিক্ত ওপেনার চ্যাড কারমাইকেল বৃহস্পতিবার ইনিংস বড় করতে পারেননি। সিলেটের শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে নাহিদ রানার দারুণ গতির এক ইনসুইংগারে  ব্যাট ছুঁইয়ে বোল্ড হয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর হ্যারি টেক্টরকে নিয়ে ৫৭ রানে জুটিতে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন পল স্টার্লিং। 

তবে ১৮-তম ওভারে দ্বিতীয় বলে তাইজুল ইসলাম তাকে টেনে বের করে আনলেন উইকেটের সামনে। টার্নে পরাস্ত হন স্টার্লিং, কিন্তু বল হাতে রাখতে পারেননি লিটন। স্টাম্পিং মিস করলেও তার গ্লাভস ছুঁয়ে বল যায় প্রথম স্লিপে থাকা শান্তর দিকে, স্ট্রাইকিং এন্ডে থ্রো করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মিলিমিটারের ব্যবধানে রান আউট হতে হয় ৪৩ রানের ইনিংস খেলা স্টার্লিংকে। এরপর হ্যারি টেক্টর ফিরেছেন তার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। অভিষিক্ত মুরাদের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে শর্ট কভারে সাদমানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টিস ক্যাম্ফার। লরকান টাকারও এলবিডব্লিউ হয়েছেন তার বলের লাইন মিস করে। 

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিনের নায়ক মূলত মাহমুদুল হাসান জয়,  আর তৃতীয় দিন দারুণ এক সেঞ্চুরিতে ৩১০ রানের লিড এনে দিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এই দুই সেঞ্চুরিয়ানের বড় দুটি ইনিংসের সাথে মুমিনুল হক, লিটন দাসের জোড়া ফিফটিতে ঘরের মাঠে সর্বোচ্চ ৫৮৭/৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। 

দুটো সেঞ্চুরি, আর দুটো ৮০ পেরোনো ইনিংসে পর অবশ্য একটা রেকর্ডও হয়েছে বাংলাদেশের। নিজেদের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রথম চার ব্যাটার খেললেন ৮০ বা  ততোধিক রানের ইনিংস। হয়েছে ফিফটির রেকর্ডও, এক ইনিংসে পঞ্চমবারের মতো বাংলাদেশের পাঁচ ব্যাটার পেরিয়ে গেছেন ফিফটি। 

৫২ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করা বাংলাদেশ, জয়ের উইকেট হারিয়েছে সকালের সেশনেই। আগের দিন ১৬৯ রানে অপরাজিত থাকা এই ওপেনার যোগ করেছেন কেবল ২ রান। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসকে তাই ১৭১ রানের বেশি টেনে নিতে পারেননি তিনি। ১৪ চার ও চারটি ছক্কার এই ইনিংস থেমেছে ব্যারি ম্যাকার্থির বলে লরকান টাকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে, একইসাথে ভাঙে ১৭৩ রানের জুটি। জয়ের সাথে ওপেনিংয়ে ১৬৮ রানের জুটি গড়া সাদমান ইসলামের পর সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন মুমিনুল হকও। ম্যাকার্থির বলে ব্যক্তিগত ৮২ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার, ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কা। 

টপ অর্ডারের এই দুই ব্যাটার ফিরলেও রীতিমতো ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করেছেন শান্ত। ১৪ চারে ১১২ বলে ছুঁয়েছেন ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি, অধিনায়ক হিসেবে চতুর্থ। যা দেশের হয়ে যুগ্ম সর্বোচ্চ। অবশ্য সেঞ্চুরির পর উইকেটে ছিলেন মাত্র ২ বল, অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের বলে হয়েছেন এলবিডব্লিউ। 

শান্তর সাথে ৯৮ রানের জুটি গড়ে, আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ১৯-তম ফিফটি ছোঁয়া লিটন দাস থেমেছেন ৬৬ বলে ৬০ রানের ইনিংসে। সিলেটের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে যেভাবে ব্যাট করেছেন, চারপাশে শট খেলেছেন, সেঞ্চুরিটাও হয়তো পেয়েই যেতেন। যদিও বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হাম্ফ্রিসকে লং অনে তুলে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। পেছনে ছুটে গিয়ে দারুণ এক ক্যাচে তাকে থামান হ্যারি টেক্টর।  ৯৯তম টেস্ট খেলতে নামা মুশফিক অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি, ২৩ রানে থেমেছেন হামফ্রিসের বলেই। এই বাঁহাতি স্পিনার ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় বার নিলেন পাঁচ উইকেট। 


মিরর বাংলা

সম্পাদক ও প্রকাশক- মাসুদুল আলম তুষার
কপিরাইট © ২০২৫ মিরর বাংলা । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত