ভারতে শুক্রবার রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে নওগাম থানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। থানায় বিস্ফোরণে এখনো পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ৩০ জনেরও বেশি।
পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক ও রাসায়নিক সামগ্রী ওই থানায় রাখা ছিল। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহের সময়েই বিস্ফোরণ ঘটে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পরে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি নিশ্চিত করে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে আনা বিস্ফোরক থেকেই এই ঘটনা। নওগাম থানায় যে বিস্ফোরক সামগ্রী উদ্ধার করে রাখা হয়েছিল, সেটি ডা. মুজ্জাম্মিল গনির বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করা ৩৬০ কেজি বিস্ফোরকের অংশ। দিল্লির লাল কেল্লার কাছে গাড়িতে যে বিস্ফোরণ হয়েছিল, সেই ঘটনায় ডা. মুজ্জাম্মিলের নামও উঠে এসেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব প্রশান্ত লোখান্ডে শনিবার একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
তিনি জানান, এটি দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনা। সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে যে বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক, দাহ্য ও রাসায়নিক পদার্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, সেখান থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষার জন্য পাঠানোর সময় ঘটনাটি ঘটে। পর্যাপ্ত সাবধানতা অবলম্বন করে থানার উন্মুক্ত অংশে রাখা এবং নমুনা সংগ্রহ করা সত্ত্বেও এই ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশের ডিজি নলিন প্রভাত সাংবাদিকদের জানান, নিহতদের মধ্যে, ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি টিমের সদস্য, স্টেট ইনভেস্টিগেটিং টিমের সদস্য, ক্রাইম ফটোগ্রাফার, রাজস্ব বিভাগের কর্মী এবং স্থানীয় টেলর রয়েছেন। আহতদের মধ্যে পুলিশকর্মী, রাজস্ব বিভাগের কর্মী এবং বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে।
নলিন প্রভাত বলেন, 'শুক্রবার রাত ১১টা ২০ নাগাদ হওয়া ওই বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে থানার পাশাপাশি আশপাশের ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বিস্ফোরণের তদন্ত শুরু হয়েছে।'
জম্মু-কাশ্মীর ও হরিয়ানা পুলিশ সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল। গত নয় ও দশই নভেম্বর হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ দাহ্য ও বিস্ফোরক সামগ্রী ওই থানায় মজুত করা ছিল।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অক্টোবর মাসে নওগাম থানায় দায়ের হওয়া একটি অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় পুলিশের যৌথ বাহিনী। সেই সময় বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক, দাহ্য ও রাসায়নিক পদার্থ উদ্ধার করা হয় বলে বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে পুলিশের কর্মকর্তারা।
অভিযানের সময় বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়, যার মধ্যে আল-ফালাহ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপকও রয়েছেন। এরই মধ্যে গত ১০ নভেম্বর দিল্লির লাল কেল্লার কাছে একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। এরপর ঘটনার সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া চিকিৎসকদের যোগসূত্রের বিষয়ে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা।
বিবিসি হিন্দির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে নওগাম এলাকার বনপুরায় এমন কিছু পোস্টার প্রকাশ্যে আসে যেখানে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর, ১৯শে অক্টোবর শ্রীনগর পুলিশ এই বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করে এবং তদন্তের জন্য একটি পৃথক দলও গঠন করে।
তদন্ত চলাকালীন, পুলিশ প্রাথমিকভাবে তিনজন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে, পুলিশ সোপিয়ান থেকে মৌলভি ইরফান আহমেদকে গ্রেপ্তার করে, যার বিরুদ্ধে পোস্টার সরবরাহের অভিযোগ ছিল। এরপর পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় যৌথ অভিযান শুরু করে। সেই সময় ডা. মুজ্জাম্মিল গনি এবং ডা. শাহীন সাইদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা দু'জনেই ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত।
তল্লাশির সূত্র ধরে পুলিশ প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, পটাসিয়াম নাইট্রেট এবং সালফারের মতো রাসায়নিক পদার্থ উদ্ধারের তথ্য জানায়।

বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ১৫ নভেম্বর ২০২৫
ভারতে শুক্রবার রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে নওগাম থানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। থানায় বিস্ফোরণে এখনো পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ৩০ জনেরও বেশি।
পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক ও রাসায়নিক সামগ্রী ওই থানায় রাখা ছিল। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহের সময়েই বিস্ফোরণ ঘটে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পরে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি নিশ্চিত করে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে আনা বিস্ফোরক থেকেই এই ঘটনা। নওগাম থানায় যে বিস্ফোরক সামগ্রী উদ্ধার করে রাখা হয়েছিল, সেটি ডা. মুজ্জাম্মিল গনির বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করা ৩৬০ কেজি বিস্ফোরকের অংশ। দিল্লির লাল কেল্লার কাছে গাড়িতে যে বিস্ফোরণ হয়েছিল, সেই ঘটনায় ডা. মুজ্জাম্মিলের নামও উঠে এসেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব প্রশান্ত লোখান্ডে শনিবার একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
তিনি জানান, এটি দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনা। সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে যে বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক, দাহ্য ও রাসায়নিক পদার্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, সেখান থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষার জন্য পাঠানোর সময় ঘটনাটি ঘটে। পর্যাপ্ত সাবধানতা অবলম্বন করে থানার উন্মুক্ত অংশে রাখা এবং নমুনা সংগ্রহ করা সত্ত্বেও এই ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশের ডিজি নলিন প্রভাত সাংবাদিকদের জানান, নিহতদের মধ্যে, ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি টিমের সদস্য, স্টেট ইনভেস্টিগেটিং টিমের সদস্য, ক্রাইম ফটোগ্রাফার, রাজস্ব বিভাগের কর্মী এবং স্থানীয় টেলর রয়েছেন। আহতদের মধ্যে পুলিশকর্মী, রাজস্ব বিভাগের কর্মী এবং বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে।
নলিন প্রভাত বলেন, 'শুক্রবার রাত ১১টা ২০ নাগাদ হওয়া ওই বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে থানার পাশাপাশি আশপাশের ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বিস্ফোরণের তদন্ত শুরু হয়েছে।'
জম্মু-কাশ্মীর ও হরিয়ানা পুলিশ সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল। গত নয় ও দশই নভেম্বর হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ দাহ্য ও বিস্ফোরক সামগ্রী ওই থানায় মজুত করা ছিল।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অক্টোবর মাসে নওগাম থানায় দায়ের হওয়া একটি অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় পুলিশের যৌথ বাহিনী। সেই সময় বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক, দাহ্য ও রাসায়নিক পদার্থ উদ্ধার করা হয় বলে বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে পুলিশের কর্মকর্তারা।
অভিযানের সময় বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়, যার মধ্যে আল-ফালাহ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপকও রয়েছেন। এরই মধ্যে গত ১০ নভেম্বর দিল্লির লাল কেল্লার কাছে একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। এরপর ঘটনার সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া চিকিৎসকদের যোগসূত্রের বিষয়ে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা।
বিবিসি হিন্দির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে নওগাম এলাকার বনপুরায় এমন কিছু পোস্টার প্রকাশ্যে আসে যেখানে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর, ১৯শে অক্টোবর শ্রীনগর পুলিশ এই বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করে এবং তদন্তের জন্য একটি পৃথক দলও গঠন করে।
তদন্ত চলাকালীন, পুলিশ প্রাথমিকভাবে তিনজন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে, পুলিশ সোপিয়ান থেকে মৌলভি ইরফান আহমেদকে গ্রেপ্তার করে, যার বিরুদ্ধে পোস্টার সরবরাহের অভিযোগ ছিল। এরপর পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় যৌথ অভিযান শুরু করে। সেই সময় ডা. মুজ্জাম্মিল গনি এবং ডা. শাহীন সাইদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা দু'জনেই ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত।
তল্লাশির সূত্র ধরে পুলিশ প্রচুর পরিমাণে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, পটাসিয়াম নাইট্রেট এবং সালফারের মতো রাসায়নিক পদার্থ উদ্ধারের তথ্য জানায়।

আপনার মতামত লিখুন