জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি’ মোকাবিলা করার জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার (২৯ অক্টোবর) সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এমন নির্দেশনার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার আসবে। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশের ভেতর থেকে, বাইরে থেকে খুবই পরিকল্পিতভাবে নানা রকম অপপ্রচার চালানো হবে। এআই দিয়ে ছবি-ভিডিও তৈরি করে ছেড়ে দেয়া হবে। এটাকে সামাল দিতেই হবে। একটা অপপ্রচারের রচনা হওয়া মাত্রই সেটা ঠেকাতে হবে যেন ছড়াতে না পারে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এসব বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রেস সচিব।
শফিকুল আলম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো, নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ পদায়ন, নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচন বানচালে ভেতর থেকে, বাইরে থেকে অনেক শক্তি কাজ করবে। ছোটখাটো নয়, বড় শক্তির কাছ থেকে হঠাৎ আক্রমণ চলে আসতে পারে। এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। যত ঝড়ই আসুক না কেন, আমাদের সেটা অতিক্রম করতে হবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। নির্বাচন সংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ১৫ই নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে বলেছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপতথ্যের নিয়ন্ত্রণের প্রস্তুতি বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বরাতে শফিকুল আলম বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার আসবে, নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশের ভেতর থেকে, বাইরে থেকে খুবই পরিকল্পিতভাবে নানা রকম অপপ্রচার চালানো হবে। এআই ছবি-ভিডিও তৈরি করে ছেড়ে দেয়া হবে। এটাকে সামাল দিতেই হবে। একটা অপপ্রচারের রচনা হওয়া মাত্র সেটা ঠেকাতে হবে, যেন ছড়াতে না পারে।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী নির্বাচন সুন্দর ও উৎসবমুখর করতে হলে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। নির্বাচনী নীতিমালা, ভোটকেন্দ্রের নিয়ম, কীভাবে ভোট প্রদান করতে হবে, কোথাও বিশৃঙ্খলা হলে কী করতে হবে- এসব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। এই আলোকে ইলেকশন কমিশন এবং কালচারাল মিনিস্ট্রিকে টিভিসি বা ডকুমেন্টারি তৈরি করতে হবে।
প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- নির্বাচনে আর্মি ও নেভির ৯২ হাজার ৫০০ এর মতো সদস্য মোতায়েন থাকবে। এর মধ্যে ৯০ হাজার থাকবে সেনাসদস্য, বাকিটা নৌবাহিনীর সদস্য। এ ছাড়া, নির্বাচনের ৭২ ঘণ্টা আগে এবং নির্বাচনের ৭২ ঘণ্টা পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ প্রস্তুতি থাকবে।
মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিজ এলাকা কিংবা শ্বশুরবাড়ি থাকে, সেখানেও তার পোস্টিং হবে না। কোনো এলাকায় আত্মীয়স্বজন নির্বাচনে দাঁড়ালেও সেখানে পদায়ন হবে না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বৈঠকে বলেছেন, ৬৪ জেলার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সবচেয়ে যোগ্য লোকগুলোকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিয়োগ করতে হবে। বিগত তিনটি নির্বাচনে ডিসি, এডিসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের এবারের নির্বাচনে যুক্ত না রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বিশেষ সহকারী আব্দুল হাফিজ, বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, মুখ্য সচিব সিরাজউদ্দিন মিয়া, নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসান, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, র্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, কোস্ট গার্ড মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল জিয়াউল হকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।

বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ৩০ অক্টোবর ২০২৫
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি’ মোকাবিলা করার জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার (২৯ অক্টোবর) সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এমন নির্দেশনার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার আসবে। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশের ভেতর থেকে, বাইরে থেকে খুবই পরিকল্পিতভাবে নানা রকম অপপ্রচার চালানো হবে। এআই দিয়ে ছবি-ভিডিও তৈরি করে ছেড়ে দেয়া হবে। এটাকে সামাল দিতেই হবে। একটা অপপ্রচারের রচনা হওয়া মাত্রই সেটা ঠেকাতে হবে যেন ছড়াতে না পারে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এসব বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রেস সচিব।
শফিকুল আলম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো, নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ পদায়ন, নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচন বানচালে ভেতর থেকে, বাইরে থেকে অনেক শক্তি কাজ করবে। ছোটখাটো নয়, বড় শক্তির কাছ থেকে হঠাৎ আক্রমণ চলে আসতে পারে। এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। যত ঝড়ই আসুক না কেন, আমাদের সেটা অতিক্রম করতে হবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। নির্বাচন সংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ১৫ই নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে বলেছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপতথ্যের নিয়ন্ত্রণের প্রস্তুতি বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বরাতে শফিকুল আলম বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার আসবে, নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশের ভেতর থেকে, বাইরে থেকে খুবই পরিকল্পিতভাবে নানা রকম অপপ্রচার চালানো হবে। এআই ছবি-ভিডিও তৈরি করে ছেড়ে দেয়া হবে। এটাকে সামাল দিতেই হবে। একটা অপপ্রচারের রচনা হওয়া মাত্র সেটা ঠেকাতে হবে, যেন ছড়াতে না পারে।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী নির্বাচন সুন্দর ও উৎসবমুখর করতে হলে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। নির্বাচনী নীতিমালা, ভোটকেন্দ্রের নিয়ম, কীভাবে ভোট প্রদান করতে হবে, কোথাও বিশৃঙ্খলা হলে কী করতে হবে- এসব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। এই আলোকে ইলেকশন কমিশন এবং কালচারাল মিনিস্ট্রিকে টিভিসি বা ডকুমেন্টারি তৈরি করতে হবে।
প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- নির্বাচনে আর্মি ও নেভির ৯২ হাজার ৫০০ এর মতো সদস্য মোতায়েন থাকবে। এর মধ্যে ৯০ হাজার থাকবে সেনাসদস্য, বাকিটা নৌবাহিনীর সদস্য। এ ছাড়া, নির্বাচনের ৭২ ঘণ্টা আগে এবং নির্বাচনের ৭২ ঘণ্টা পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ প্রস্তুতি থাকবে।
মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিজ এলাকা কিংবা শ্বশুরবাড়ি থাকে, সেখানেও তার পোস্টিং হবে না। কোনো এলাকায় আত্মীয়স্বজন নির্বাচনে দাঁড়ালেও সেখানে পদায়ন হবে না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বৈঠকে বলেছেন, ৬৪ জেলার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সবচেয়ে যোগ্য লোকগুলোকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিয়োগ করতে হবে। বিগত তিনটি নির্বাচনে ডিসি, এডিসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের এবারের নির্বাচনে যুক্ত না রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বিশেষ সহকারী আব্দুল হাফিজ, বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, মুখ্য সচিব সিরাজউদ্দিন মিয়া, নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসান, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, র্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, কোস্ট গার্ড মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল জিয়াউল হকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।

আপনার মতামত লিখুন