ট্রেনে বসছে সিসি ক্যামেরা

0
85

একের পর এক নাশকতার ঘটনা ঘটছে ট্রেনকে ঘিরে। আর তা প্রতিরোধে বসছে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। অপরাধী শনাক্ত ও ঘটনা প্রতিরোধে ইতিমধ্যে ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানো শুরু করেছে রেলওয়ে পুলিশ। সব ট্রেনেই ক্যামেরা বসবে বলে জানান সংশ্লিস্টরা।

রেলওয়ে পুলিশ জানায়, প্রথম পর্যায়ে আন্তনগর ট্রেন, পরবর্তী সময়ে বাকি ট্রেনগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। প্রতিটি ট্রেনের সামনে-পেছনে এবং গুরুত্বপূর্ণ সব স্থানে থাকছে সিসি ক্যামেরা। প্রথমে যাত্রীদের কাছে যেসব ট্রেনের চাহিদা বেশি সেসব আন্তনগর ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, ‘নাশকতা এড়াতে রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলছে। প্রথমে কয়েকটি ট্রেনে ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব ট্রেন এর আওতায় আনা হবে।’

ক্যামেরার সুবিধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা থাকলে নাশকতার পাশাপাশি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপও রোধ করা যাবে। কেউ নাশকতা কিংবা পাথর নিক্ষেপের মতো ঘটনা ঘটালে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা সহজ হবে। প্রথম পর্যায়ে সিসিটিভি মনিটরিং করা হবে রেলওয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে।’

চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানো শুরু হয়েছে। গত ১০ জানুয়ারি থেকে এই কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশিতা, মহানগর প্রভাতী ও সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানো শেষ হয়েছে। প্রতিটি ট্রেনে ১২টি করে ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ট্রেনেও এ ক্যামেরা লাগানো হবে।’
ঢাকা রেলওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, হাওর এক্সপ্রেস নামে দুটি ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ট্রেনগুলোতে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে।’

আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘শুধু ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে তা নয়, পাশাপাশি যেসব স্টেশনে আগে থেকে সিসি ক্যামেরা নেই সেখানেও লাগানো হচ্ছে। বিশেষ করে, ঢাকার রেলওয়ে স্টেশনগুলো পুরোপুরি সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে। যেকোনও নাশকতা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে এসব এটি।’

সম্প্রতি রাজনৈতিক স্বার্থে আতঙ্ক ছড়াতে বাস ও ট্রেনে আগুন দেয়ার ঘটনা বাড়ছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনতে পুলিশকে বেগ পেতে হচ্ছে। অধিকাংশ ঘটনা থেকে যাচ্ছে অমিমাংসিত।

গত ১৬ নভেম্বর রাতে টাঙ্গাইল স্টেশনে টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের কোচে আগুন দেয়া হয়। ওই ঘটনায় ট্রেনটির দুটি কোচ পুড়ে যায়।
১৯ নভেম্বর জামালপুরের সরিষাবাড়ী স্টেশনে যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়া হয়। এ সময় ট্রেনটির দুটি কোচ পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও একটি কোচ।
২২ নভেম্বর রাতে সিলেট রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি কোচে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
১৩ ডিসেম্বর রেলওয়ের ভাওয়াল গাজীপুর এবং রাজেন্দ্রপুর সেকশনে ২০ ফুট রেললাইন কেটে ফেলা হয়। কেটে ফেলা ওই রেললাইনে দুর্ঘটনায় পড়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেনের ইঞ্জিন এবং ছয়টি কোচ লাইন থেকে ছিটকে পড়লে একজন নিহত হন। আহত হন অনেকে।
১৯ ডিসেম্বর ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে মা ও শিশু সন্তানসহ চার জন জীবন্ত দগ্ধ হয়। আহন হন ৮ জন।
৫ জানুয়ারি রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়া হয়। এ আগুনে দগ্ধ হয়ে চার যাত্রীর মৃত্যু হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here