বাংলাদেশে দুইদিনের সফর শেষে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। দিল্লিতে ভারত সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।
স্থানীয় সময় সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
‘ইউএস-ইন্ডিয়া ২+২ ইন্টারসেশনাল ডায়ালগ’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অষ্টম ইউএস-ইন্ডিয়া ২+২ ইন্টারসেশনাল ডায়ালগের সময় সহযোগিতা প্রসারিত করার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করতে মার্কিন ও ভারতীয় কর্মকর্তারা ভারতের নয়াদিল্লিতে একত্রিত হয়েছেন।
বৈঠকে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেনে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা করেছেন ডোনাল্ড লু। এছাড়াও আলোচনা হয়েছে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, জ্বালানি সহযোগিতা ও মহাকাশ ইস্যু নিয়ে। তবে বাংলাদেশ নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি।
বৈঠকে লু ছাড়াও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নাগরাজ নাইডু এবং ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতার যুগ্মসচিব বিশ্বেশ নেগি এবং ইন্দো-প্যাসিফিক সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব ডিফেন্স জেডিদিয়া পি. রয়েল উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ২+২ ইন্টারসেশনাল ডায়ালগে প্রতিরক্ষা, মহাকাশ ও বেসামরিক বিমান চলাচল ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি সহযোগিতা এবং শিল্প ও লজিস্টিক সমন্বয়সহ অভিন্ন অগ্রাধিকারগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেনের ন্যায়সঙ্গত টেকসই শান্তির জন্য সমর্থনের পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলসহ বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তায় সমর্থনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন কর্মকর্তারা। এ সময় লু ও রয়েল চলমান অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ইন্টারসেসনাল এই ডায়ালগ পরবর্তী ২+২ মন্ত্রী পর্যায়ের সংলাপের ভিত্তি স্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত তাদের বিস্তৃত বৈশ্বিক এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ডনাল্ড লু’র ঢাকা সফর নিয়ে যা জানালো স্টেট ডিপার্টমেন্ট
বাংলাদেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করার বিষয়ে কথা বলতে ঢাকায় এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
বাংলাদেশে ডনাল্ড লু’র সফর সম্পর্কে এক সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান, আমি বিশ্বাস করি সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লু বাংলাদেশে আছেন। তার বৈঠক সম্পর্কে কি আপনার জানা আছে? আরও বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বোঝাপড়া এবং বাংলাদেশ যেদিকে যাচ্ছে- তা যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে মূল্যায়ন করে। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঘোষণা আছে তারা বাংলাদেশে সাহায্য করবে, সে বিষয়ে আপনাদের লক্ষ্য কি?
জবাবে মিলার বলেন, হ্যাঁ ডনাল্ড লু ঢাকায় আছেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা, সুশাসন এবং উন্নয়নের প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করতে পারে, এ বিষয়ে লু অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। তিনি সেখানে একজন মার্কিন সহায়তাকারী প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত আছেন। বাংলাদেশের জনগণের জন্য উজ্জ্বল এবং সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে এবং সেখানে সুশাসন ও বাণিজ্য প্রসারিত করতে ২০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র।