কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেছেন, গত ৫ আগস্টের পর সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মিলিয়ে ৩৭ জন কারাগারে রয়েছেন। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৯ জন ডিভিশন সুবিধা পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন কারা মহাপরিদর্শক।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৬২২ মামলায় ১৫ হাজার ব্যক্তি গ্রেফতার হন। তারা শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কারাগার থেকে মুক্তি পান। বর্তমান সরকার ওই ৬২২ মামলা প্রত্যাহার করেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আলোচিত ৪৩ মামলার আসামি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে মুক্ত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, আন্দোলন ও আন্দোলন-পরবর্তী হামলার শিকার হয় দেশের ১৭টি কারাগার। এর মধ্যে ৮টি কারাগার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহত হন ১৮২ কারারক্ষী। পলাতক ৯৮ জনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও জঙ্গি ৭০ জন এখনও নিখোঁজ।
সংবাদ সম্মেলনে কারা মহাপরিদর্শক জানান, জেলখানায় হামলার কারণ ও পলাতকদের খুঁজতে গোয়েন্দাদের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, দুই হাজারের বেশি পালালেও বর্তমানে ৯০০ জন পলাতক আছেন। বাকিরা কারাগারে ফেরত এসেছে। অতিদ্রুত সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
কারা অধিদফতর ও কারাগারগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সংস্কার শুরু হয়েছে জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন বলেন, সৎ, দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এখন পদায়ন করা হচ্ছে। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যারা ঘুরেফিরে একই কর্মস্থলে ছিলেন, তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে অন্য সংস্থার সহযোগিতায় অভ্যন্তরীণ তদন্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, বন্দী ও কারারক্ষী অনেকেই মাদকাসক্ত। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স (শূন্য সহিষ্ণুতা) গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগে এক কারারক্ষীকে মাদকসহ পাওয়া যাওয়ায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কারাগারে যাতে মাদক ঢুকতে না পারে, সে বিষয়ে কারা ফটকে প্রতিনিয়ত তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কারাগার মাদকশূন্য করার জন্য ধাপে ধাপে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একপর্যায়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ করে শূন্যে নিয়ে আসা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোতাহের হোসেন বলেন, ৫ আগস্টের পর সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মিলিয়ে ৩৭ জন কারাগারে রয়েছেন। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৯ জন ডিভিশন সুবিধা পেয়েছেন।