কোটা বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যেই এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রস্তাব সংগ্রহ করবে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। পাশাপাশি বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত লেখা লিফলেট বিতরণ, উন্মুক্ত আলোচনারও আয়োজন করবে তারা।
শনিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এ কর্মসূচির কথা জানান। তাদের নতুন এই কর্মসূচির নাম ‘পলিসি এডভোকেসি’ এবং ‘ডোর টু ডোর’ প্রচারণা কর্মসূচি।
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্ট রায় দেওয়ার পর জুলাইয়ের শুরু থেকে বিক্ষোভে নামে শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে তারা প্রায় প্রতিদিন সড়কে অবস্থান নিয়ে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিল।
১০ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দেয়। এরপর সড়কে নেমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল পুলিশ। সেদিন এক সংবাদ সম্মেলনে আপিল বিভাগের আদেশের পর জনদুর্ভোগ সৃষ্টির মতো কর্মসূচি না দিয়ে তাদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানায় ছাত্রলীগও।
তবে তাদের দাবি সরকারের প্রতি এবং তা কোটা সংস্কারের জন্য- এই বক্তব্য তুলে ১১ জুলাই আবার পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই শাহবাগ অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, “আমাদের ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের প্রতিটি হলে শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে তাদের সঠিক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করব। কোটা ইস্যুতে কেউ যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য সচেষ্ট রয়েছি। এজন্য সঠিক তথ্য উপাত্ত লিফলেট আকারে শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরব। যেন তারা ভুল পথে পা না বাড়ায়। কোনও ধরনের ষড়যন্ত্রে নিজেদের ভবিষ্যৎ জীবন নষ্ট না করে। এ দেশ আমাদের, শিক্ষার্থীদের বিষয়টি মাথায় রেখে চলতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে ভর করে দেশের অগ্রযাত্রা বিকৃত করার ষড়যন্ত্র করে, এ আন্দোলনে তাদের সম্পৃক্ততা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে দেশের শান্ত পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করলে ফল ভালো হবে না।”
সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, “আমরাও কোটার যৌক্তিক সুরাহা চাই। আমরা লক্ষ্য করছি, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছে, কিন্তু কিছু গোষ্ঠী পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে। তবে কোটা সংস্কার তাদের মূল লক্ষ্য নয়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সফল করতে তারা আন্দোলন করছে। আমরা মনে করি আন্দোলনকারীরা বোকার রাজ্যে বসবাস করছে।”
সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, ‘২০১৮ সালে যারা আন্দোলন করেছে তাদের কেউই বিসিএস প্রিলিমিনারিতে পাস করতে পারেনি, আমাদের কাছে তথ্য আছে। অবরোধ করে রাজনৈতিক মনোযোগ নেওয়ার জন্য এই আন্দোলন। তবে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ লড়ে যাবে।”