তাপমাত্রার পারদ ক্রমশ নিম্নগামী। ঘন কুয়াশায় সূর্যের দেখা নেই। হিমেল হাওয়া যোগ করেছে শীতের তীব্রতা। হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডায় বেড়েছে মৌসুমি রোগবালাই। দেশের ১৩ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। জবুথবু জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। সব মিলিয়ে শীতে কাবু দেশ। যে চিত্র সহসায় বদলাচ্ছে না। আরও কয়েকদিন এমন শীত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এরপর বৃষ্টির আভাসও দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে শীতের তীব্রতার কারণে বাজারে বেড়েছে শীতকালীন পোশাকের বিক্রি। অন্যদিকে আয় কমেছে খেটে খাওয়া মানুষের। তীব্র শীতে যারা কাজে যোগ দিচ্ছেন তারাও মৌসুমি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠাণ্ডা নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা। মূলত সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়া ও উত্তরের ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে সারা দেশেই শীতের তীব্রতা বেড়েছে।
গতকাল সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল দিনাজপুরে। সকালে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়াও দেশের যে ১৩ জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে সেগুলো হলো- রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী এবং লালমনিরহাট।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী পাঁচদিনের মধ্যে সারা দেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠাণ্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। আগামী দু’দিন (রোববার ও সোমবার) ঘন কুয়াশা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। রাতের তাপমাত্রাও অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
সংস্থাটি জানায়, তীব্র শীত আরও দুই থেকে তিন দিন থাকতে পারে। এরপর ১৭ থেকে ১৯শে জানুয়ারি আকাশ মেঘলা থাকবে। বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির পর আবার তীব্র শীত নামবে। মাসের বাকি সময় থাকতে পারে তীব্র শীত। এ সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চল, সিলেট, যশোর ও চুয়াডাঙ্গাজুড়ে বয়ে যেতে পারে শৈত্যপ্রবাহ। এদিকে রাজধানীতেও বেড়েছে শীতের তীব্রতা। সারাদিন সূর্যের দেখা নেই অনেক এলাকায়। কনকনে ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত নগরজীবন। খুব কাজ না থাকলে মানুষ বাসা থেকে বের হচ্ছে না। যারাও বের হচ্ছে তারাও কাজ শেষে দ্রুত ঘরে ফিরছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীর বিপণি বিতান ও ফুটপাথে বেড়েছে শীতের কাপড়ের বিক্রি। হঠাৎ চাহিদা তুঙ্গে থাকায় খুশি ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানান, এবার শীতের কাপড়ের চাহিদা শুরুতে কম ছিল। কিন্তু হঠাৎ শীত বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি বেড়েছে অনেক। সব বয়সী মানুষের কথা চিন্তা করেই দোকানে কালেকশন রাখা হয়েছে।