যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানেন যে তিনি গাজা যুদ্ধের অবসান চান। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) টাইম ম্যাগাজিনকে এ কথা বলেন তিনি। টাইম ম্যাগাজিন জানিয়েছে,নির্বাচনি প্রচারের সময় নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে এই অবস্থানের কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েল এ খবর জানিয়েছে।
টাইমস অব ইসরায়েল অক্টোবরে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল,ট্রাম্প তার মার-এ-লাগো রিসোর্টে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকে ট্রাম্প বলেছিলেন, নির্বাচনে জয়ী হলে দায়িত্ব গ্রহণের আগেই তিনি গাজা যুদ্ধের সমাপ্তি চান।
ওই সময় ট্রাম্পের এমন প্রকাশ্য আহ্বানে অস্বস্তি প্রকাশ করেছিল ইসরায়েল। কারণ তাদের মতে,এই ধরনের আহ্বান ইসরায়েলের ওপর অন্যায়ভাবে চাপ সৃষ্টি করে।
তবে ট্রাম্প এই মাসের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেওয়া এক পোস্টে সতর্ক করেছিলেন যে, ‘মধ্যপ্রাচ্যের বন্দিদের মুক্তি না দেওয়া হলে চরম মূল্য দিতে হবে।’ তবে এতে তিনি হামাস বা ইসরায়েলের নাম উল্লেখ করেননি।
নেতানিয়াহু এখনও গাজা যুদ্ধ শেষ করার শর্ত হিসেবে বন্দিদের মুক্তির প্রস্তাবে সাড়া দেননি। তার যুক্তি,এতে হামাস পুনরায় শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পাবে। সেই সঙ্গে তার ডানপন্থি জোট সঙ্গীরা এমন কোনও চুক্তিতে সম্মতি দিলে সরকার ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলের নিরাপত্তা সংস্থা যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে বেশি ইতিবাচক। তাদের মতে,ইসরায়েল চাইলে আবারও গাজায় সেনা প্রবেশ করাতে পারবে। তবে ইসরায়েল যদি চুক্তি করতে দেরি করে,অনেক বন্দি জীবিত নাও থাকতে পারে।
সম্প্রতি,ইসরায়েলি কর্মকর্তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।
এক আরব কূটনীতিক টাইমস অব ইসরায়েলকে জানিয়েছেন, উভয় পক্ষ ইসরায়েলের গাজা থেকে প্রত্যাহার সংক্রান্ত শর্তে সমঝোতার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। তবে বড় বাধা এখনও রয়ে গেছে-যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে নাকি সাময়িক।
মধ্যস্থতাকারীরা এখনও তিন ধাপের চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন,যা মে মাসে ইসরায়েল জমা দিয়েছিল এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রকাশ্যে সমর্থন করেছিলেন।
ইসরায়েল প্রথম ৪০-৬০ দিনের চুক্তির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। আরব কূটনীতিক বলেছেন,হামাস ভয় পাচ্ছে যে, ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের পর ইসরায়েল আবারও লড়াই শুরু করতে পারে।
ট্রাম্প নেতানিয়াহুর ওপর দ্বিতীয় মেয়াদে আস্থা রাখবেন কিনা, টাইমের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি কারও ওপরই আস্থা রাখি না।’
ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘যে কোনও কিছু হতে পারে।’ তার এই প্রতিক্রিয়া তার নির্বাচনি প্রচারের বার্তার চেয়ে ভিন্ন। প্রচারের সময় ট্রাম্প বারবার বলেছিলেন,তিনি নতুন কোনও যুদ্ধ শুরু করবেন না।